1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan Shanto : Rakibul Hasan Shanto
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

মিথ্যে মামলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ

  • Update Time : শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০
  • ৫৫৯ Time View

জিসান তাসফিকঃ মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে সমাজে বসবাস করে। সমাজে নানান মতাদর্শের মানুষ আছে। যার ফলে মাঝে মধ্যে সমাজে বসবাসকারী মানুষজন পরস্পর পরস্পরের সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরে। এই সকল দন্দ্ব অবসানের জন্য সমাজের অধিপতিরা বিচার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। যেখানে দ্বন্দ্ব অবসানের বিচারালয়কে বলা হয় আদালত। আইনের পরিভাষায় এই সকল দ্বন্দ্ব যখন আদালতে আসে তখন তাকে মামলা মোকদ্দমা বলে।

আমাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানে ৯৪ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর কথা বলা আছে । এছাড়াও ১১৪ নং অনুচ্ছেদে অধীনস্থ অর্থাৎ জেলা ও বিশেষ আদালতের কথা বলা আছে। মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনার জন্য আছে আদালত ব্যবস্থা। আইনে মামলার নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে এটা যখন কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অথবা প্রতিষ্ঠান অপর কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অথবা প্রতিষ্ঠান দ্বারা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থ অথবা প্রতারিত অথবা এমন কিছু যা আইনত নিষিদ্ধ তখন উক্ত কাজের জন্য আদালতে ক্ষতিপূরণ বা রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী শাস্তির জন্য যে দাবি পেশ করা হয় তখন তাকেই মামলা বলা হয়।

মামলা দুই ধরনের একটি ফৌজদারী অপরটি দেওয়ানী। যখন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ বা অধিকারের দাবিতে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা করে সেটা দেওয়ানী মামলা আর শাস্তি বা অর্থদণ্ডের দাবিতে মামলা করলে সেটি ফৌজদারী মামলা। সমাজে আমরা যখন কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হই, তখনই প্রতিকারের আশায় আদালতে মামলা করি এবং প্রচলিত আইন ও ন্যায় ব্যবস্থায় একটি সুষ্ঠ সমাধান আশা করি।

কিন্তু এমন অনেকে আছে যারা অন্যকে হেয় করা উদ্দেশ্য আইনের অপপ্রয়োগ করে মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে মামলা করে। উদাহরণস্বরূপ কোনো একব্যক্তির সাথে অন্য ব্যক্তির একটি বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হল আর কিছুই না। কিন্তু তাকে হেয় করা উদ্দেশ্যে প্রথম তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩৬২ ধারার অপহরণ এর অভিযোগ তুলে ৩৬৩ ধারা অনুযায়ী সাত বছরের কারাদণ্ড ও শাস্তি দন্ড দাবির তুলে ফৌজদারী আইনে আদালতে মামলা করে দিল। অথচ এমন ঘটনার কোনো বাস্তবতাই ছিল না। এটাও একটি মিথ্যে মামলা। যে ব্যক্তি মামলা করে তাকে বাদী বলে আর যার বিরুদ্ধে মামলা হয় তাকে বিবাদী বলে।

এছাড়াও আইনের অপব্যাখ্যা বা অপব্যবহারের জন্য মামলা মিথ্যে হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ মোবাইলের মালিকের অবর্তমানে তাকে না জানিয়ে দিয়ে কেউ একজন মোবাইল নিয়ে গেল। মোবাইলের মালিক থানায় গিয়ে মামলা করলেন। কিন্তু এজাহারে উল্লেখ করলেন যে মোবাইলের সাথে দশ ভড়ি স্বর্ণ ও চুরি হয়েছে এবং বাংলাদেশ দন্ডবিধি অনুযায়ী ৩৭৮ ধারা অভিযোগ তুলে, ৩৭৯ ধারা তিনবছরের শাস্তি এবং অর্থ দন্ডের দাবি করে মামলা করলেন।

মোবাইলের মালিক ভেবে রাখলেন যে চুরির জন্য বেশি দোষ চাপিয়ে মামলা করলে শাস্তি বেশি হবে। কিন্তু বাস্তবতা এমনটি নয়। আইন অনুযায়ী চোর চোইই এবং তার শাস্তি অমনই। বরং মালিকের দেওয়া মিথ্যে তথ্যের জন্য মামলাটি হালকা হয়ে যাবে এমনকি এটাও দাবি হতে পারে যে আসলে মামলাটি মিথ্যে ছিল কিনা। সুতরাং মামলা করার সময় সত্য ঘটনা অবলম্বন করতে হবে। এতে করে প্রমাণ করাও সহজ হয়ে যাবে।

মিথ্যে মামলা করা আইনত অপরাধ এবং আদালতের জন্য বোঝা। বাংলাদেশ দন্ডবিধির ২১১ ধারা অনুযায়ী মিথ্যা মামলার শাস্তি হল দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ড। আবার কেউ যদি মিথ্যা মামলা করে সাতবছরের এর অধিক বা যাবৎজীবন কারাদন্ড দাবি করে তাহলে মিথ্যে মামলা করার জন্য সাত বছরে জেল অথবা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। আবার মিথ্যা মামলার জন্য বিবাদী মানহানির অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করতে পারবে। হয়রানিমূলক বা সত্য গোপন করে মামলা করে উল্টো শাস্তি পেতে হবে কারণ বাদী-বিবাদীর মতামত ও প্রমাণ সাপেক্ষে আদালতে সবকিছু পরিস্কার হয়ে যায়।

বর্তমানে দেশের আদালতে প্রায় ৩৭ লক্ষ মামলা ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে কিন্তু পর্যাপ্ত বিচারক নেই। এর মধ্যে মিথ্যা মামলা বিচার ব্যবস্থার জন্য বোঝা। যারা সত্যিকারের প্রতিকারের জন্য আসে তাদের মামলাও জটে পরে যায়। সুতরাং বাংলাদেশের সুনাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য আমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে চলে সঠিক তথ্য দিয়ে সঠিক বিচার দাবি করা।

লেখক-
শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ,
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়
ই-মেইলঃ zeesuntasfiq9314@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..